বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৪৪ অপরাহ্ন

সস্ত্রীক দুদকের জালে সাবেক এমপি মোস্তাফিজুর ও শিমুল

সস্ত্রীক দুদকের জালে সাবেক এমপি মোস্তাফিজুর ও শিমুল

বিশেষ প্রতিনিধি: অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে চট্টগ্রাম-১৬ আসনের সাবেক এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও তার স্ত্রী শাহীন আক্তার চৌধুরী এবং নাটোর-২ আসনের এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুল ও তার স্ত্রী শামীমা সুলতানা জান্নাতীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার (৬ জানুয়ারি) তাদের নামে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মোস্তাফিজুর রহমান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুদক। যেখানে প্রথম মামলায় মোস্তাফিজুর রহমান আর দ্বিতীয় মামলায় মোস্তাফিজুর ও তার স্ত্রী শাহীন আক্তার চৌধুরীকে আসামি করা হয়েছে।

দুদকের মহাপরিচালক বলেন, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে নিজ নামে ৯৮ লাখ ৬৭ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করেছেন। এছাড়া ৯টি ব্যাংকের ২১টি হিসাবের মাধ্যমে ১৮ কোটি ৭৫ লাখ ৯৮ হাজার ৫৮০ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।

এছাড়া শাহীন আক্তার চৌধুরীর নামে ২ কোটি ৬ লাখ ৩০ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করেছেন। পাঁচটি ব্যাংকের ৬টি হিসাবের মাধ্যমে ৩ কোটি ১৩ লাখ ৭৮ হাজার টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।

গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর মোস্তাফিজুরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। গত ১ জানুয়ারি মোস্তাফিজুর ও শাহিন আকতারের চারটি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেয় আদালত।

অন্যদিকে, নাটোর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল ও তার স্ত্রী শামীমা সুলতানা জান্নাতীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুদক।

শিমুলের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৫ কোটি ১৪ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪৯ টাকার সম্পদ অর্জন করে ভোগদখলে রাখা এবং নিজ নামীয় ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক ১১টি হিসাবের মাধ্যমে মোট ৮ কোটি ১১ লাখ ৭৮ হাজার ২০৫ টাকা জমা ও ৭ কোটি ৫০ লাখ ৫০ হাজার ৬০২ টাকা উত্তোলনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি মোট ১৫ কোটি ৬২ লাখ ২৮ হাজার ৮০৭ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন করেছেন বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

পৃথক মামলায় শিমুলের স্ত্রী শামীমা সুলতানা জান্নাতীকে আসামি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১১ কোটি ২২ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন করে ভোগদখলে রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া নিজ নামীয় ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক ৪টি হিসাবের মাধ্যমে মোট ৫ কোটি ২৯ লাখ ২ হাজার ৬৬ টাকা জমা ও ৫ কোটি ১৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন। তার বিরুদ্ধে মোট ১০ কোটি ৪৩ লাখ ৯১ হাজার ৪৯৬ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেন, শামীমা সুলতানা জান্নাতীর নামে ২০২০ সালের ১০ জানুয়ারি প্রায় ১৭ লাখ ২৫ হাজার কানাডিয়ান ডলারে কানাডার টরেন্টোর ৭৩, হেয়ারউড অ্যাভিনিউয়ে একটি বিলাসবহুল বাড়ি কেনা হয় বলে আমরা জানতে পেরেছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশি টাকায় একচেঞ্জ রেট অনুযায়ী বাড়িটির ক্রয়মূল্য আনুমানিক ১১ কোটি টাকা। ওই বাড়িটির মালিকানা সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র সংগ্রহের জন্য কার্যক্রম চলমান রয়েছে। শামিমা সুলতানা জান্নাতীর নামে কেনা বাড়ির কোনো তথ্য বা রেকর্ডপত্র সংগ্রহপূর্বক তা তদন্তকালে আমলে নেওয়া হবে। তবে এ দম্পতির সম্পদ অর্জন ও ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের সময়কাল জানাননি তিনি।
গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর সাবেক এমপি শিমুলের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামে দুদক।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2025 Protidiner Kagoj |